চাহিদা কমলেও নিত্যপণ্যের বাজার চড়া

ঈদের ছুটি শেষে নগরবাসী এখনো ঢাকায় না ফেরেনি। সেই কারণে চাহিদা কম থাকলেও কমেনি নিত্যপণ্যের দাম। রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস, খাসির মাংস, মুরগি, ডিম, কাঁচা মরিচ ও সবজির দাম চড়া।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের ছুটিতে সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় রাজধানীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সবজির দাম বেড়েছে।

এছাড়া ঈদের ছুটিতে বাজার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলো সক্রিয় না থাকায় একদল ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট ঈদের পর মাংস, ডিম ও সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

শুক্রবার কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা রমিজ উদ্দিন ইউএনবিকে বলেন, কারওয়ান বাজারে অল্প সংখ্যক সবজির ট্রাক এসেছে, যেখানে সাধারণত শাকসবজি ও অন্যান্য পণ্য নিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি ট্রাক এখানে আসে।

মগবাজার এলাকার সবজির খুচরা বিক্রেতা আলী হোসেন জানান, শুক্রবার কারওয়ান বাজার থেকে তিনি প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) হিসাবে শসা ৬০০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ১২০০ টাকায় কিনেছেন। তাই তাকে বেশি দামে এসব জিনিস বিক্রি করতে হচ্ছে।

কারওয়ান বাজার, মহাখালী, মালিবাগ, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেটগুলোতে ক্রেতা কম। কিন্তু সবজি, মাংস, ডিম ও মুরগির মাংস বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার রাজধানীতে ফার্মের ডিমের দাম প্রতি ডজন (১২ পিস) ১৫ টাকা বেড়ে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গৃহপালিত মুরগির ডিম প্রতি হালি (৪ পিস) ৭৫ থেকে ৮০ টাকা এবং হাঁসের ডিম প্রতি হালি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগি ও পাকিস্তানি সোনালি মুরগির দাম আগের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। আকার ও মান ভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২২৫ টাকায়। এ ছাড়া সোনালি মুরগি আকার ও মান ভেদে প্রতি কেজি ৩৪৫ থেকে ৩৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একইভাবে প্রতি কেজি কক মুরগি ৩৭০ থেকে ৩৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৭০০ থেকে ৭৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের সময় সরবরাহ কম ও অধিক বিক্রি হওয়ায় মুরগির দাম বেড়ে গিয়েছে।

অন্যদিকে বাজারে গরুর মাংস কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এছাড়া খাসির মাংস ১০৫০ থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে ও ছাগলের মাংস ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।

ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানির ঈদের পর বাজারে সাধারণত ব্রয়লার মুরগির চাহিদা কম থাকে। দামও কমতির দিকে থাকে। কিন্তু এবার বাজারে সেই চিত্র দেখা যায়নি। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ক্রেতারা।

বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধু লোকের দৌরাত্ম্য কমে আসবে বলে জানান তারা।

এদিকে বেগুনসহ অন্যান্য সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে, লাউ, চালকুমড়া ও ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কাঁচা মরিচ ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকা, শসা ১২০ টাকা বা তার বেশি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দেশি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা, রসুন ২২০ থেকে ২৬০ টাকা, আদা ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।