চীন থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাওয়ার আশায় বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের হিসাব-নিকাশ করতে একটি সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) বিষয়ে আলোচনায় বসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। চীন ওই সমঝোতা স্মারক বাংলাদেশকে পাঠিয়েছে।

মঙ্গলবার বাণিজ্য সচিব মো. সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র দ্য মিরর এশিয়াকে জানিয়েছে।

বাংলাদেশ মনে করছে, এর মাধ্যমে চীন থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার তারা পাবে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে মূলত দুই দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিসহ (এফটিএ) এমওইউ নিয়ে আলোচনা হবে। এরই মধ্যে ঢাকা ও বেইজিং এফটিএ নিয়ে একে-অপরের কাছে খসড়া যৌথ সম্ভাব্যতা-অধ্যয়ন প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছে।

এদিকে গত মার্চ মাসে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এক গবেষণায় দেখা গেছে, চীনের সঙ্গে প্রস্তাবিত এফটিএ স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশ আমদানি শুল্ক থেকে প্রতি বছর প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকা হারাতে পারে। তবে যদি চীনা বিনিয়োগকারীরা এফটিএ’র আওতায় বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে আসে, তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হওয়ার সম্ভব রয়েছে।

সূত্রের তথ্য মতে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার ধাক্কা সামাল দিতে দুই দেশের মধ্যে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনার পর এফটিএ বাস্তবায়ন করতে হবে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, চীনের কোম্পানিকে সুবিধা দিতে হবে, যারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। বর্তমানে চীন বাংলাদেশের একক বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। তাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে চীন এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা কমাতে এফটিএ একটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উভয় দেশের পণ্য এফটিএ সুবিধার অধীনে কর সুবিধা ভোগ করবে। পাশাপাশি তারা আশা করছেন, বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগও বাড়াবে।

চীন-বাংলাদেশের বর্তমানে বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২১ বিলিয়ন ডলার। এতে চীনের রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলার। চীন ২০২২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুল্ক লাইনের ৯৮ শতাংশের জন্য বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের প্রস্তাব দিয়েছে। আগে এটি ছিল ৯৭ শতাংশ।

ফলে বাংলাদেশ থেকে ৮,৯৩০টি পণ্য ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে প্রবেশাধিকার পাচ্ছে। বাংলাদেশ ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত ৯৭ শতাংশ ট্যারিফ লাইনের অধীনে ৮,২৫৬টি পণ্যের সুবিধা পাচ্ছে।