পেঁয়াজের দামে সেঞ্চুরি

ফাইল ছবি

আবারও বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দাম ঠেকেছে ১০০ টাকায়। খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। এছাড়া আলুর দাম ঠেকেছে ৬৫ টাকায়; যা গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা বেশি। কমেনি কাঁচা মরিচের ঝাঁঝ, বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে। আরও বেশকিছু নিত্যপণ্যের দাম এখনো চড়া। ঈদের দুই সপ্তাহ আগে পেঁয়াজ ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল হয়ে পড়ছেন নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা। শুক্রবার রাজধানীর গোপীবাগ, কাপ্তান বাজার ও লক্ষীবাজারের এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

এসব বাজারে গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। যা এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। খুচরা দোকানে বাছাই করা পেঁয়াজ এখন ১০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে। এগুলো আকারে একটু বড়। সাধারণ মানের পেঁয়াজ ৯৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ কম। মাত্র অল্প কয়েকটি দোকানে আমদানি করা পেঁয়াজ দেখা গেছে। আমদানি করা পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে একই দামে।

পেঁয়াজ বিক্রেতা আহমেদ্দুল হক বলেন, পেঁয়াজের মৌসুম যত শেষের দিকে যাচ্ছে, দাম তত বাড়ছে। আগামীতে এ দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা বলা যাচ্ছে না। মৌসুম শুরু হবে নভেম্বরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠলে দাম কমে আসতে পারে।

তিনি বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ কম। কারণ ভারত পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে। ওই দামে পেঁয়াজ আমদানি করলে শুল্ককরসহ দেশে আনতে প্রায় ৮০ টাকা খরচ হয়। যে কারণে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে না। এতে বাজার শুধু দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভর করেই চলছে। যে কারণে দাম বেশি।

দেশে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ৮ লাখ ২০ হাজার টন। অন্যদিকে, বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা এবং উৎপাদন ৩৫ লাখ টনের মধ্যে প্রায় ৮ লাখ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এই ৮ লাখ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়।

অন্যদিকে বাজারে বেড়েছে আলুর দামও। গত সপ্তাহে খুচরায় ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। তবে দরদাম করলে কোনো কোনো দোকানে ৬০ টাকায় মিলছে।

গোপীবাগ বাজারের দোকানদার হায়াতউল্লাহ বলেন, ৬০ টাকায় আলু বিক্রি করলে কোনো লাভ থাকে না। কারণ, পাইকারি কেনায় পড়ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে।

তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে আলুর দাম প্রায়ই ২ থেকে ৩ টাকা বাড়ছে। আসলে আলুর সংকট দেখা দেওয়ায় দাম বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুরে আলুর খুব সংকট চলছে, পাওয়া যাচ্ছে না। এ বছর উৎপাদন কম হওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।

কাপ্তান বাজারে কেনাকাটা করতে আসেন আহমেদ হক। দ্য মিরর এশিয়াকে তিনি বলেন, তিনদিন আগেও ৫৫ টাকা কেজি দরে আলু কিনেছি। এখন ৬৫ টাকা চাচ্ছে। দামদর করে ৬২ টাকায় নিলাম।

তিনি আরও বলেন, আগে সংসারে খরচ কমানোর জন্য আলুই বেশি খেতাম। সেটারও যদি এত দাম হয়, খাবো কী এখন?

ঈদুল আজহার আগে আগেই এবার বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। ওই দাম এখনো সেভাবে কমেনি। কোরবানির সময়ে ঢাকায় কাঁচা মরিচের কেজি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। কিছুটা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।