অর্থনৈতিক কারণে সাড়ে তিন বছর পর সরকারের পতন হবে: রেজা কিবরিয়া

ড. রেজা কিবরিয়া।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)- এর সাবেক উপদেষ্টা, গণঅধিকার পরিষদের সাবেক নেতা এবং অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া মুখোমুখি হয়েছিলেন দি মিরর এশিয়ার। একান্ত সাক্ষাৎকারে আসছে বাজেটসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি-

দি মিরর এশিয়া: দেশের আগামী বাজেট কেমন হবে এবং মূল্যস্ফীতির অবস্থা কি হবে বলে মনে করছেন?

রেজা কিবরিয়া: এ সরকারের আমলে বাজেট হচ্ছে চুরি পরিকল্পনা। এদের তো টাকার অভাব নেই। কিছু হলেই শেখ হাসিনা সরকারের গোলাম গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সরকারী টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছেড়ে দেয়। যা এ দেশের জনগণের ওপর মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দেয়। এ অতি মূল্যস্ফীতি এক ধরনের ট্যাক্স। এ ট্যাক্স সরকার ঘোষণা দেয় না। বাজেট তো আওয়ামী সরকারের নানা ধরনের চুরি করার ফন্দি ফিকির। এমন ক্ষেত্রে সরকার সাধারণ জনগণের ওপর জিনিসপত্র কিনতে ভ্যাট দিয়ে থাকে।

দি মিরর এশিয়া: ধনীদের ওপর বাজেটে কর ঘোষণা করে?

রেজা কিবরিয়া: দেশের ধনী লোকজন কোনো ধরনের বড় কর দেয় না। বাজেটে এদের জন্য কোনো কর আরোপ করে না। এরা যে কর দেয় তা কোনভাবেই তাদের গায়ে লাগে না। এসব সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় থাকা ধনী লোকদের কিভাবে আপনি  ধরবেন ?  একজন শুনেছি ১০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। দেশের সম্পদ সব নিজের নামে না রেখে বেনামে রেখেছে। কিভাবে এসব সরকারি অলিগার্কিদের আইনের আওতায় আনবে বলেন।

দি মিরর এশিয়া: সিপিডি বাজেট নিয়ে অনেক কথা বলে…

রেজা কিবরিয়া: বাজেট নিয়ে সিপিডি মতো থিঙ্ক ট্যাঙ্করা অনেক কথা বলেন। এ আসলে চুরি করার জন্য সংখ্যার খেলা। সেটা সিপিডি ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সরকারের এ বিশাল চুরি কথা থিংক ট্যাংকরা কেউ কিছু বলে না।

দি মিরর এশিয়া: এ ভাবে বিভিন্ন বড় ধরনের চুরি ঠেকাতে এবং অর্থ পাচার রোধে দেশের স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব?

রেজা কিবরিয়া: বিএনপি এ নিকৃষ্টতম স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে টেনে নামাতে পারবে কি না তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। তবে অর্থনৈতিক দৈন্য অবস্থার জন্য অবশ্যই সাড়ে তিন বছর পর এমনিতেই সরকারের পতন হবে । কারণ এখন ভারত এবং আমেরিকার সমর্থনে একটা ডামি নির্বাচনে তারা ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে। এখন আমেরিকা লোক দেখানো এবং নামে মাত্র বাংলাদেশের গুটি কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাদের স্যাংশন দিলে তো কোনভাবেই সরকার পরিবর্তন হবে না। এখন জনগণকে ছাড়া এ ভাবে কতদিন টিকে থাকবে এ সরকার? যে কোন কিছুর শেষ আছে। কারণ আফ্রিকান গ্রেট লেক অঞ্চলের কাছে উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ কেনিয়া এবং উত্তর তানজানিয়োর বসবাসকারী নিলোটিক জাতি গোষ্ঠীর অপর নাম মাসাই। মাসাইয়ের গোত্রের জনগণ গরুর দুধের সাথে এ পশুর রক্ত খেয়ে থাকে। এমনভাবে গরু রক্ত খায় যাতে গরুটা মারা না যায় । নিকৃষ্টতম স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা জনগণ থেকে শুধু যেভাবে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ তুলে নিচ্ছে, জনগণ বাঁচবে কি না তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।

দি মিরর এশিয়া: নিকৃষ্টতম স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই অর্থ প্রয়োজন পড়ে?

রেজা কিবরিয়া: স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে টিকে থাকলে হলে অবশ্যই তাকে বিরোধী দলের মানুষজনকে গুম-খুন এবং আড়ি পাতা জন্য অনেক ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হয়ে থাকে । সেই নির্যাতন কর্মকাণ্ড চালু রাখার জন্য অবশ্যই টাকা প্রয়োজন আছে। এ টাকার সংস্থান বর্তমান হয়তো কমে গেলেও তারা টাকা ছাপিয়ে জনগণের ওপর মূল্যস্ফীতির বোঝা চাপিয়ে দিয়ে এসব নির্যাতনমূলক কর্মসূচী রাখবে ।

দি মিরর এশিয়া: আইএমএফের শর্তের কারণে সরকার কি বেকায়দায় পড়বে?

রেজা কিবরিয়া: সরকার নয়, জনগণ আইএমএফের শর্তের কারণে বেকায়দায় পড়বে। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই ।