খুলনার তিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরু

সর্বজনীন পেনশন-সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেড প্রদান ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনার তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন।

দেশের অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সোমবার (১ জুলাই) থেকে এ কর্মবিরতি শুরু করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ও খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এস এম ফিরোজের ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকী জানান, সর্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে গত মে মাস থেকে আন্দোলন চলছে। এখনো এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আমরা পাইনি। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় আজ ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি (ক্লাস, পরীক্ষা ও সমস্ত দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকবে) পালন শুরু করেছি।

একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রণয়ন এবং সুপার গ্রেড প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি দাবি জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাসিব। সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা বক্তৃতা করেন।

এসময় বক্তারা বলেন, একই বেতনস্কেলে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি অবলম্বন সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এর মাধ্যমে একটি রাষ্ট্র একই শ্রেণির কর্মচারীর একটি নির্দিষ্ট অংশকে সুবিধাবঞ্চিত করবে।

এ সময় বক্তারা প্রত্যয় স্কিম বাতিল করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যেখানে একটা পেনশন ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছেন সেখানে নতুন করে অন্য একটি বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিমে তাদের অন্তর্ভূক্তির ফলে সরকারি অন্যান্য চাকরিজীবী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য বাড়াবে। এই পেনশন ব্যবস্থার ফলে ভবিষ্যতে মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানে উৎসাহ হারাবে। প্রধানমন্ত্রীর টেকসই ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন গভীর অন্তরায় হবে।

বক্তারা অবিলম্বে সর্বজনীন পেনশন স্কিম থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অন্তর্ভূক্তি প্রত্যাহারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রণয়ন ও সুপারগ্রেড প্রদানের দাবি জানান।

একই দাবিতে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও কর্ম বিরতি শুরু করেছেন। এর ফলে খুলনার এই তিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।