ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ বাড়ল

ড. ইউনূসের জামিনের মেয়াদ বাড়ল

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের করা মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের জামিন আগামী ১৪ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

জামিন পাওয়া অন্যরা হলেন— গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

বৃহস্পতিবার ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এম এ আউয়াল (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) এ আদেশ দেন।

ড. ইউনূসের আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, এ মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৪ আগস্ট দিন ঠিক করেছেন আদালত।

এর আগে গত ১৬ এপ্রিল শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. ইউনূসকে ২৩ মে পর্যন্ত জামিন দিয়েছিলেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২৩ মে ড. ইউনূসের জামিন ৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের করা এ মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। 

এছাড়া প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। গত ১ জানুয়ারি এ রায় দেওয়া হয়।

রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজন। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল এই আপিল সেদিন শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। তৃতীয় শ্রম আদালতের দেওয়া রায় ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে চারজনকে জামিন দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। 

এ অবস্থায় তৃতীয় শ্রম আদালতের রায় ও আদেশ স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের অংশবিশেষের বৈধতা নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন (ফৌজদারি রিভিশন) করেন মামলার বাদী কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক। 

বাদীর এই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। রুলের ওপর শুনানি শেষে আদালত গত ১৮ মার্চ কয়েকটি দিক বিবেচনায় রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে হাইকোর্ট রায় দেন। গতকাল বুধবার এ রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চারজনের (ড. ইউনূসসহ চার কর্মকর্তা) বিরুদ্ধে দেওয়া কনভিকশন (দোষী সাব্যস্তকরণ) কার্যকর থাকবে। আপিল বিচারাধীন অবস্থায় কনভিকশন স্থগিত করার কোনো বিধান নেই। আপিল নিষ্পত্তির মাধ্যমে কেবল এই কনভিকশন বাতিল, বহাল ও সংশোধন হতে পারে।

রায়ে বলা হয়, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল থেকে চারজন জামিন পেয়েছেন। তাদের সাজা (সেনট্যান্স) স্থগিত করার কোনো প্রয়োজন দেখা যাচ্ছে না, জামিন পাওয়ার পর তাদের সাজা-সংক্রান্ত আদেশ স্বয়ংক্রিয় ও আরোপিতভাবে স্থগিত আছে। তাই যতক্ষণ তারা জামিনে আছেন, সাজা স্থগিত থাকবে। 

আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শ্রম আদালতের দেওয়া জরিমানা স্থগিত থাকবে। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান যত দ্রুত সম্ভব আপিল (ড. ইউনূসসহ চার কর্মকর্তার করা) নিষ্পত্তি করবেন। দেশের বাইরে গেলে তাদের (ইউনূসসহ চারজন কর্মকর্তা) শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হলো।