জনগণের সম্মতি ছাড়া রেল চলাচলের চুক্তি সার্বভৌমত্ব-বিরোধী: এবি পার্টি

জনগণের সম্মতি ছাড়া একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর দিয়ে অন্য একটি দেশের ট্রেন চলাচলের চুক্তিকে সার্বভৌমত্ববিরোধী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। দলটি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছে, একটি প্রহসনমূলক ভোটারবিহীন নির্বাচনে ভারতের অনৈতিক সমর্থনের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ প্রতিদান হিসেবে গোপন প্রতিশ্রুতি মোতাবেক দাসখত লিখে দিতে সরকার ভারতের সাথে অন্যায্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।

আজ সোমবার এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব অভিযোগ করেন দলটির নেতারা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে অন্ধকারে রেখে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে যে গণবিরোধী চুক্তি সরকার করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে ভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে কোনো চুক্তি হলে তা সংসদে তুলে ধরতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ কখনো তা করেনি। ব্লু ইকোনমির নামে বাংলাদেশের সম্পদ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। 

ভারতের সাথে স্পর্শকাতর তথ্য বিনিময়ের যে চুক্তি হয়েছে সে সম্পর্ক জনগণকে অবহিত করতে হবে। ভারতের সাথে স্যাটেলাইট চুক্তির মাধ্যমে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার আশঙ্কা প্রকাশ করে তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে কি-না নাগরিক হিসাবে আমরা জানতে চাই।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া ও ট্রেন চলাচলের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কী লাভ বা স্বার্থ তা পরিষ্কার করতে হবে। নদীর পানি প্রবাহের আন্তর্জাতিক আইন কখনোই ভারত মানেনি। আমাদের নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আমাদের অধিকার। এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে নিয়ে এবি পার্টি আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। 

সভাপতির বক্তব্যে এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, অনির্বাচিত সরকার যে অন্যায় চুক্তি করেছে আমরা সেজন্য ধিক্কার জানাই। বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করি। নিজেদের আত্মমর্যাদা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি। 

সাম্প্রতিক সময়ে কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের মতো সংগঠন বিবৃতি দিয়ে দুর্নীতিবাজদের পক্ষ নেওয়ার বিষয়টি অনৈতিক।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে যারা ক্ষমতার দাপটে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে তদন্তের কারণে তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কথা কিন্তু পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন আতঙ্কিত হচ্ছে জনগণ তা জানতে চায়? প্রজাতন্ত্রের কতিপয় কর্মচারী কিভাবে এতো পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছে এই জবাব জনগণকে দিতে হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি জানান। 

এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সঞ্চালনায় ব্রিফিংয়ে আরো বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, কেন্দ্রীয় নেতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম প্রমুখ।