যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামসের বিবৃতি, কঠোর ইসরায়েল

যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামসের বিবৃতি, প্রতিক্রিয়ায় কঠোর ইসরায়েল

গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দিয়েছে হামাস। প্রস্তাবিত সেই বিবৃতি নিয়ে কঠিন ভাষায় কথা বলেছে ইসরায়েল। তারা বলেছে, হামাস যদি তাদের কব্জায় থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলেই গাজা ইস্যুতে শান্তি চুক্তির ব্যাপারটি বিবেচনা করবে ইসরায়েল।

দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সবার আগে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। যদি তা না হয়, তাহলে গাজায় অভিযান থামবে না। কোনো চুক্তিও হবে না।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার হামাসের হাইকমান্ড একটি বিবৃতি দিয়েছে। সেই বিবৃতিতে তারা বলেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আর কোনো আলোচনায় অংশ নিতে রাজি নয় তারা; তবে ইসরায়েল যদি গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করে, তাহলে সব জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি স্থায়ী শান্তি চুক্তির জন্য তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।

বিবৃতিতে হামাস বলেছে, গাজায় আমাদের জনগণ, পরিবার-পরিজনের ওপর গণহত্যা চলছে। যারা বেঁচে আছে, তারা প্রতিদিন আগ্রাসন-দুর্ভিক্ষ-দখলদারিত্বের শিকার হচ্ছে। হামাস এবং ফিলিস্তিনের অন্যান্য নেতৃস্থানীয় বিভিন্ন গোষ্ঠী মনে করে, এ পরিস্থিতিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় হামাসের অংশগ্রহণ সার্বিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হবে না।

তারা জানায়, আমরা আমাদের মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়ে দিয়েছি যে, যদি দখলদার বাহিনী গাজায় আগ্রাসন বন্ধ করে, তাহলে গাজা ইস্যুতে একটি সম্পূর্ণ (শান্তি) চুক্তির জন্য আমরা প্রস্তুত। এই চুক্তিতে (সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া সংক্রান্ত) একটি বিস্তৃত সমঝোতাও অন্তর্ভুক্ত হবে।

হামসের এই বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের অবস্থান স্পষ্ট করেন ওই কর্মকর্তা।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে থেকে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। লাখ লাখ বেসামরিক ফিলিস্তিনি শহরটিতে অবস্থান করছেন। গাজার বিভিন্ন এলাকায় গত প্রায় ৮ মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে রাফায় এসে আশ্রয় নিয়েছেন এই ফিলিস্তিনিরা।

জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) সম্প্রতি রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান বন্ধের আদেশ দিয়ে রায় দিয়েছে; কিন্তু সেই রায় উপেক্ষা করে সেখানে সেনাঅভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। 

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনও চলছে। গত প্রায় আটমাস ধরে চলমান এ ভয়াবহ অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে।